ভারতের বিখ্যাত সিএমসি হাসপাতাল,ভেলোর এর A to Z

খ্রিষ্টান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ভেলোর/সি এম সি ( CMC VELLORE )হসপিটাল ভারত মধ্যবিত্তের চিকিৎসার শহর | চেন্নাই গিয়েছিলাম  চিকিৎসা করাতে। যাবার আগে অগ্রিম তথ্যের জন্য গুগল খুঁজে দেখলাম। খিছুই খুজেঁ পেলাম না। তাই চেন্নাই , ভ্যালরে চিকিৎসা করে এসে এবার নিজের অভিজ্ঞতা অন্যদের সাথে শেয়ার করছি। আশা করছি এতে অনেকেই উপকৃত হবেন।

কেন ভেলোরে চিকিৎসা করবেন?

ভেলোর রয়েছে ভারতের বিখ্যাত সিএমসি হাসপাতাল। হাসপাতালের মান ও সেবা একেবারেই বিশ্বমানের কিন্তু চিকিৎসা খরচ তুলনামূলক অনেক কম। এটি খ্রিস্টান মিশনারী পরিচালিত একটি অলাভজনক হাসপাতাল। আমার হিসেবে জটিল অপারেশনে বাংলাদেশের একটি ভাল মানের প্রাইভেট হাসপাতালে যে খরচ হয় প্রায় একই খরচে আপনার ভ্যলরে ট্রান্সপোর্ট, থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা সব খরচই হয়ে যাবে। কিন্তু চিকিৎসা পাবেন বিশ্ব মানের। হাসপাতালের প্রায় ৩৫ ভাগ বাংলাদেশী রোগী। অনেক রোগীকে দেখেছি সিএমসিতে গিয়ে প্রমান হয়েছে দেশে তারা ভুল চিকিৎসা বা ভুল ডায়াগনসিসের শিকার হয়েছিলেন। তাই আপনার রোগ ও চিকিৎসার যথার্থতাও নিশ্চিত হতেও সিএমসিতে একবার দেখিয়ে আসতে পারেন।ভৌগলিক অবস্থানঃদক্ষিন ভারতের রাজ্য তামিলনাডু। বাংলাদেশ হতে পশ্চিমবঙ্গ, ওডিসা, অন্ধপ্রদেশ, তেলুগু রাজ্য পার হয়ে তারপর তামিলনাডু রাজ্য।

রাজ্যের রাজধানী চেন্নাই যা পূর্বে মাদ্রাজ নামে পরিচিত ছিল। চেন্নাইতে রয়েছে দুইটি বিখ্যাত হাসপাতাল। চেন্নাই এ্যাপোলো এবং রামচন্দ্র হাসপাতাল। চেন্নাই হতে ১৩৩ কিঃমিঃ দূরে একটি জেলা শহর ভ্যালর। ভ্যালরেও রয়েছে বিখ্যাত দুইটি হাসপাতাল। সিএমসি হাসপাতাল এবং নারায়নী হাসপাতাল।তামিলনাডুর কোন হাসপাতালে চিকিৎসা করাবেন?সিএমসি, নারায়নী,চেন্নাই এ্যাপোলো এবং রামচন্দ্র চারটি বিখ্যাত হাসপাতাল রয়েছে তামিলনাডু রাজ্যে। আমার মতে যাদের সময় ও ধৈয্য আছে তারা চিকিৎসা করাবেন সিএমসিতে। সিএমসিতে চিকিৎসা বিশ্বমানের কিন্তু রোগীর আধিক্যের কারনে ডাক্তারের এ্যাপয়েন্টমেন্ট থেকে শুরু করে সবকিছুতেই সময় বেশি নিবে, লাইনে দাড়াতে হবে, ওয়েটিং রুমে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হবে।

যাদের সময় কিংবা ধৈয্য কম কিন্তু টাকা আছে তাদের সাজেস্ট করব চেন্নাই এ্যাপোলোতে চিকিৎসা করতে। আর যাদের সময়, ধৈয্য এবং টাকা সবই কম তাদের বলব শ্রি রামচন্দ্র বা নারায়নী হাসপাতালে চিকিৎসা করতে। দুইটির মধ্যে শ্রি রামচন্দ্র হাসপাতালকে আমি এগিয়ে রাখব। মনে রাখবেন, শ্রি রামচন্দ্র বা নারায়নী হাসপাতালে দুটিই মান ও সেবায় বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোর তুলনায় অনেক অগ্রগামী কিন্তু খরচে বাংলাদেশের প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর তুলনায় কম।কিভাবে যাবেন?১।ঢাকা-চেন্নাইঃ ঢাকা হতে সরাসরি বিমানে চেন্নাই যেতে পারেন। ভাড়া জন প্রতি ১৫০০০-১৮০০০ টাকা। ২। ঢাকা-কলকাতাঃ বাস (এসি)- ২০০০-২৫০০ টাকা বাস (নন-এসি) – ১০০০-১৪০০ টাকা ট্রেনঃ ৩৫০০ বিমানঃ  বাংলাদেশ বিমান-৭,০০০+- টাকা জেট এয়ার ৭১০০+- এয়ার ইন্ডিয়া ৭১০০+- (কিছু কম বেশি হতে পারে) ৩। কলকাতা – চেন্নাই ট্রেনঃ জেনারেল টিকেট ভাড়া থ্রি টায়ার এসি – ৩২০০+- টাকা, ননএসি- ১৮০০+- টাকা। ২৭-৩০ ঘন্টা জার্নি। বিমানঃ ৬০০০-৮০০০ টাকা (কিছু কম বেশি হতে পারে)। প্রায় ২:৩০ ঘন্টার জার্নি।৪। চেন্নাই – ভ্যালরঃ টেক্সি ক্যাব রিজার্ভ – নন এসিঃ ১৮০০-২০০০ রুপি, এসিঃ ২২০০-২৫০০ রুপি রেলঃ ভাড়া ২০০ রুপি বাসঃ ভাড়া ১৫০-২০০ রুপি ।

** চেন্নাই হতে ভ্যালর যাত্রায় রেলে অনেক ভীড় হয় এমনকি বসার সিটও পাওয়া যায় না। তাই টেক্সি ক্যাব বা বাসে যাওয়াই ভাল।** কলকাতা-চেন্নাই ট্রেনের টিকেট বাংলাদেশের বিশ্বস্ত ট্রাভল এজেন্টদের কাছ থেকে নেওয়াই ভাল। কলকাতায় যাওয়ারপর টিকেট নাও পেতে পারেন। তাছাড়া কলকাতায় গিয়ে টিকেটের জন্য ২/১ দিন স্টে করে মূল্যবান সময় নস্ট ও অতিরিক্ত খরচ কেন করবেন? আমি ট্রাভল এজেন্টদের মাধ্যমেই ট্রেনের টিকেট করেছিলেম। কলকাতায় গিয়ে এক রাতও হোটেলে থাকতে হয়নি।** কলকাতা-কাটপাডি ও সরাসরি ট্রেনে যাওয়া যায়। ভাড়া প্রায় একই। সময় ২৮-৩২ ঘন্টা। কিন্তু টিকেট পেতে হলে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বুক করে রাখা ভাল।কাটপাডি মানে ভেলরের রেল ষ্টেশন। রেল ষ্টেষন থেকে সিএমসি পর্যন্ত অটো ভাড়া ১০০-১৫০ রুপি। কাটপাডি স্টেশন হতে বাসেও সিএমসি যেতে পারেন। ভাড়া মাত্র ৫ রুপি।

কোথায় থাকবেন? সিএমসি এর আশে পাশেই অসংখ্য হোটেল, লজ পাবেন। লজগুলোতে পাবেন রান্নার সুবিধা এবং রুম ভাড়াও তুলনামূলক কম। নন-এসি ২৫০ হতে ৪০০ রুপি। বেশিরভাগ লজগুলোই ভ্যাপসা গন্ধ, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের অভাব রয়েছে।আর আপনার সঙ্গী হিসেবে রুমগুলোতে পাবেন ছাড়পোকা। তবে পরিস্কার-পরচ্ছন্ন, আলো-বাতাসযুক্ত এবং ছারপোকামুক্ত রুম নিতে চাইলে ডাবল রুমের জন্য বাজেট সামান্য বাড়াতে হবে। মিনিমাম তিন দিনের জন্য রুম ভাড়া নিতে হয়। আমার অপিনিয়ন হলো প্রথমে বেশি টাকা দিয়ে একটি ভাল হোটেলে উঠে পড়ুন। ১ম দিন হাসপাতাল রেজিস্ট্রেশন, পুলিশ স্টেশনে রিপোর্ট ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ততা যাবে।

২য় দিন হতে কম খরচে ভাল মানের লজ খুজে বের করবেন।ভাল করে ২/৩ দিন সার্চ করলেই কম বাজেটে মনের মতো লজ পেয়ে যাবেন। হাসপাতালের কাছের লজগুলোতে ভাড়া তুলনামূলক বেশি। আমি ছিলাম হাসপাতালের একেবারেই কাছে । রুম ভাড়া ডাবল সিট 450 রুপি, ত্রিপল বেড 650 রুপি, চার বেড রুম 750 রুপি। আর প্রথম দিকে আমি ছিলাম একটু দূরে আরকে রেসিডেন্সিতে।ভাড়া ডাবল বেড 350 রুপি, ত্রিপল বেড 450 রুপি। এ দুটি লজই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পর্যাপ্ত আলো-বাতাস রয়েছে এবং ছাড়পোকা মুক্ত। লজ গুলতে রয়েছে স্বপাকের ব্যবস্থা। ১ সেট হাড়ি-পাতিল-প্লেট ও গ্যাসের সিলিন্ডারর চুলার দৈনিক ভাড়া ১০ হতে ১৫ রুপি। সিলিন্ডারে গ্যাস খরচ প্রতি কেজি ১০০ রুপি। ৩ জনের রান্না হলে ১ কেজিতে ৬/৭ দিন চলে যাবে। খাওয়ার পানি ১ জার ৩৫-৪০ রুপি।

রেজিস্ট্রেশন ও এ্যাপয়েন্টমেন্টঃসিএমসিতে চিকিৎসার শুরুতেই সকল বিদেশী রোগী ও তার এটেনডেন্টকে আইআর অফিস (রুম নং ৯০০) এ রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবে তার আগে নতুন রোগীদেরকে প্রি রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। বাংলাদেশ হতেই অনলাইনে প্রি রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন বা আইআর অফিসের আশে পাশেই সাইবার ক্যাফ/কম্পিউটার দোকান হতে ৫০ রুপির বিনিময়ে প্রিরেজিস্ট্রেশন করাতে পারেন। প্রি রেজিস্ট্রেশন শুধু রোগীকে করতে হয়, রোগীর সাথে আগত এটেন্ড্যান্টদেরকে প্রি রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন নেই। এসময় একটি প্রিন্টেড কপি পাবেন। এই প্রিন্টেড কপি, রোগী ও এটেনডেন্টের পাসপর্টের মুল ও ফটোকপি আই আর অফিসে (মূলত একটি রুম) জমা দিবেন। তারপর অপেক্ষা করুন। সিরিয়াল ধরে আপনাকে ডাকা হবে।

রেজিস্ট্রেশন, ডাক্তারের এ্যাপয়েন্টমেন্ট সবকিছুই এখানে হবে।আপনাকে একটি হাসপাতাল নম্বর দিবে যা হবে আপনার আইডি নম্বর। বাংলাদেশে চিকিৎসা করালে তারা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, ডায়াগনোস্টিক রিপোর্ট দেখতে চাইতে পারে তাই সব কিছু সাথে রাখবেন। এসময় তারা আপনাকে একটি ক্রিশ কার্ড করে দিবে। তারপর এপয়েন্টম্যান্ট অনুসারে ডাক্তার দেখাবেন। ডাক্তার এপোয়েন্টমেন্ট নেক দেরীতে পেলে দ্রুত এপোয়েন্টমেন্ট এর জন্য আইএসএস বিল্ডিং এর ৪৩২ নাম্বার কাউন্টা্রে যোগাযোগ করুন।

ক্রিশ কার্ডঃক্রিশ কার্ড মূলত সিএমসি এর একটি ডেবিট কার্ড। টাকা নিয়ে ঘুরতে না চাইলে বা হোটেলে টাকা রাখতে না চাইলে আপনার সকল টাকা হাসপাতালের নির্ধারিত কাউন্টারে জমা দিয়ে ক্রিশ কার্ডে টাকা ভরে নিন। টাকা ভরার সময় আপনাকে রিসিট দিয়ে দিবে। ০.০৫% সার্ভিস চার্জ কেটে নিবে। ডাক্তার ভিজিট, ঔষধ ক্রয়, হাসপাতাল ভর্তি হতে শুরু করে সিএমসিতে আপনার যে কোন বিল ক্রিশ কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারেন। এটি চুরি হলেও অন্য কেউ আপনার বিল ছাড়া অন্য কোন পেমেন্ট করতে পারবে না। কার্ডের পাসওয়ার্ড গোপন রাখুন। ফেরার সময় সামান্য ব্যালেন্স রেখে বাকি টাকা তুলে নিন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বসে এই কার্ড দিয়েই অনলাইনে আপনি আপনার পছন্দমতো ডাক্তার এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে আসতে পারবেন। এজন্য প্রইয়োজনীয় কিছু ব্যালেন্স রেখে আসুন।

পুলিশ রিপোর্টঃভ্যালরে পৌছে রোগী ও রোগীর এটেনডেন্টকে পুলিশ স্টেশনে রিপোর্ট করতে হয়। এজন্য প্রথমে অনলাইনে ‘সি’ ফরম পূরন করতে হবে। আপনার হোটেলের ম্যানেজারই ‘সি’ ফরম পূরনে ব্যবস্থা করে দিবে। এজন্য আপনাকে পাসপোর্ট ও পাসপোর্ট সাইজের ফটো দিতে হবে। প্রতি ফরম পূরনে তাদেরকে ৫০ রুপি দিতে হবে। তারপর ‘সি’ ফরমের প্রিন্টেড ২ কপি, হাসপাতালের রেজিস্ট্রেশন ফরম (যদি থাকে), হোটেল/লজের ভিজিটিং কার্ড, পাসপর্টের মুল ও ফটোকপিসহ ভ্যালর পুলিশ স্টেশনে চলে যাবেন। সারাদিন বিভিন্ন কাজ সেরে সন্ধায় পুলিশ স্টেশনে যাবেন রিপোর্ট করতে। আর মনে রাখবেন প্রতি পাসপোর্টের জন্য পুলিশকে ২০ রুপি উপরি দিতে হবে।

টাকা দরকার হলে কি করবেন:বাংলাদেশ হতে যাবার সময় যা পারেন টাকা/ডলার নিয়ে যাবেন। কলকাতা হতে টাকা ভাঙ্গিয়ে নিবেন কেননা এখানেই সবচাইতে ভাল রেট পাবেন। কালকাতায় প্রতি একশ টাকায় বর্ডার হতে ৩০-৫০ পয়সা বেশি এবং ভ্যালর হতে প্রায় ২ টাকা রেট বেশি পাবেন। ভ্যালরে গিয়ে টাকা ফুরিয়ে গেলে বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য যে কোন দেশ হতে ওয়েস্টান ইউনিয়ন, মানিগ্রাম এর মাধ্যমে টাকা আনতে পারবেন। কিন্তু বাংলাদেশ হতে বৈধভাবে টাকা আনার কোন উপায় আমার জানা নেই। আপনার হোটেল/লজের আশে পাশেই কিছু হুন্ডি বিজনেস পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশে তাদের একাউন্টে কেউ টাকা জমা দিবে, ৩০ মিনিট হতে ১ ঘন্টার মধ্যে আপনি তাদের কাছ থেকে টাকা তুলে নিবেন।

ভিসা সংক্রান্তঃমেডিক্যাল ভিসা নিয়ে ভ্যালরে চিকিৎসা করতে আসুন। চিকিৎসা সম্পূর্ণ হবার পূর্বে আপনার ভিসার মেয়াদ শেষ হোলে আপনার ডাক্তারের রিকমেন্ড লেটার নিয়ে সিএমসি এর আইআর অফিসে যাবেন।সেখান হতে রিকমেন্ড লেটার নিয়ে ভ্যালর এসপি অফিসে অতিরিক্ত সময় স্টে করার অনুমতি নিন। মেডিক্যাল ভিসা ছাড়া অন্য ভিসায় আপনি এই সুযোগ পাবেন না। অনুমতি ছাড়া ওভার স্টে করলে আপনাকে কিন্তু ভাল ঝামেলাই পড়তে হবে।কিছু টিপসঃ ** রোগী হিন্দি/ইংরেজীতে কথা বলতে না জানলে এটেন্ডেন্ট হিসেবে হিন্দি বা ইংরেজীতে কথা বলতে পারে এমন কাউকে সাথে নিয়ে যাবেন।** অপারেশনের দরকার হলে মহিলা এটেন্ডেন্ট নিয়ে যাবেন। হাসপাতালে রাতে রোগীর সাথে শুধু মহিলা থাকতে পারবে। মহিলা নিয়ে না গেলে নার্সদেরকে বলে আপনাকে একজন আয়া নিতে হবে। আয়ার চার্জ প্রতিদিন ২০০ রুপি। ** হাসপাতালে ডাক্তারের অফিস, ল্যাব, ফার্মেসি, কোন বিল্ডিং বা যে কোন স্থান খুজে পেতে সিকিউরিটি গার্ডের সাহায্য নিন। চারিদিকি সিকিউরিটি গার্ডের লোকেরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং কোন স্থান খুঁজে পেতে তারা দারুন সাহায্য করে।

ভেলোরে সি এম সি সম্পর্কে কয়েকটি কথা…….

১/ ভেলোর:-ভেলোর এর ট্রিটমেন্ট কতটা উপযোগী & উন্নতমানের সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আমরা সাধারনত কোন উপায় না পেলে অবশেষে ভেলোর যায়। ওখানে কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, খরচ, মেডিসিন, যোগাযোগ, এপোয়েন্টমেন্ট এর বিস্তারিত নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি যাতে সকলের সাহায্য হয়। প্রসেস খুব নিয়মানুযায়ী হয় যাস্ট একটু জটিল।২/ভাষা :-হিন্দি/ইংরাজী ঠিকঠাক জানলে প্রব্লেম হওয়ার কথা নয়, তবে এখন পেসেন্ট এর ৭০% ই বাঙালী (bangladesh & westbengal er)… তাই বাংলা হলেও কাজ চলে যাবে। ৩/এপোয়েন্টমেন্ট:-এপোয়েন্ট মুলত দুই প্রকার এর হয়{১.} জেনারেল এপোয়েন্টমেন্ট ( জুনিয়ার ডাক্তার দেখেন){২. }প্রাইভেট এপোয়েন্টমেন্ট(সিনিয়ার ডাক্তার রা দেখেন)এখান থেকে কেউ গেলে অবশ্যই প্রাইভেট এপোয়েন্টমেন্ট নেবেন।

৪/এপোয়েন্টমেন্ট পদ্ধতি:-সাধারনত অফলাইন & অনলাইন দুই রকমের এপোয়েন্টমেন্ট নেওয়া যায়। যেহেতু আমরা বাংলা থেকে যাচ্ছি তাই আমাদের ওখানে কোন লোক নেই ধরে নিয়ে অনলাইন এপোয়েন্টমেন্ট করাতে হবে।অনলাইন এপোয়েন্টমেন্ট :- মোটামুটি যেহারে ভীড় হয়, তাতে কোন ডিপার্টমেন্ট এর প্রাইভেট এপোয়েন্টমেন্ট পেতে আপনাকে ১৫ দিন থেকে ৩ মাস অব্দি সময় লাগতে পারে। এপোয়েন্টমেন্ট এর জন্য Treat Expert এর সাথে যোগাযোগ করুন।

৫/অফলাইন এপোয়েন্টমেন্ট:-ভেলোর এর মেন গেট এ ঢুকলেই দেখতে পাবেন SILVER GATE FOR NEW APPOINTMENT..আপনি আপনার প্রব্লেম টা ওখানে জানালেই ওরা নিদিষ্ট ডিপার্টমেন্ট এ এপোয়েন্টমেন্ট দিয়ে দেবে। এক্ষেত্রে আপনি ৩-৩০ দিনের মধ্যে প্রাইভেট এপোয়েন্টমেন্ট পেয়ে যাবেন একপ্রকার নিশ্চিত।৬/জরুরীকালীন ট্রিটমেন্ট:-এর জন্য আলাদা EMERGENCY বিভাগ রয়েছে, সেখানে যাবেন। ওরাই সব প্রসেস বলে দেবে।জেনারেল এপোয়েন্টমেন্ট:- অনলাইন অথবা অফলাইন এ করা যায়। ১-৩ দিন এর মধ্যে এপোয়েন্টমেন্ট পেয়ে যাবেন।

৭/কোন ডিপার্টমেন্ট এ যাবেন???আপনি অনলাইন এ আপোয়েন্টমেন্ট নিতে গেলে কোন ডিপার্টমেন্ট এ নেবেন সেটা জানা জরুরী, নাহলে টাইম & পয়সা নষ্ট। ধরুন- কানের প্রব্লেম- ENT, হরমোন প্রব্লেম- endocrinology, ক্যন্সার পেশেন্ট:- onchology etc..যদি না বুঝতে পারেন তাহলে ওদের সাইট এ দেওয়া হেল্পলাইন এ ফোন করে জেনে নিতে পারেন। প্রব্লেম বললেই ওরা ডিপার্টমেন্ট বলে দেবে। আপনার রোগ এর লক্ষন অনুযায়ী ডিপার্টমেন্ট এর আন্ডারে CLINIC বাছতে হয়।

৮/থাকা :-এখানে রুম এর চাহিদা যেমন বেশি তেমন লজ ও আছে প্রচুর। ডবল বা ট্রিপল বেড এর রুম 250-400 থেকে শুরু করে ১৫০০-২০০০ টাকা অব্দি। আপনি CMC থেকে যত দুরত্ব বাড়াবেন তত লজের রেট কমতে থাকবে। মোটামুটি ৭-৮ মিনিট হাঁটাপথের দুরত্বে আপনি ২০০-২৫০ টাকার রুম পেয়ে যাবেন। আপনি ২৪ ঘন্টা মানে একদিনের জন্য রুম বুক করে একটু খোজাখুজি করে কম দামে ভাল রুম ও দেখতে পারেন।৯/খাওয়া-দাওয়া:-অজস্র বাঙ্গালী হোটেল আছে, আপনি ৪০-৬০ টাকা/মিল হিসাবে ভাত পেয়ে যাবেন। এছাড়া সাউথ ইন্ডিয়ান খাবার ও উপভোগ করতে পারেন তবে ৩-৪ দিন এর বেশি টানতে পারবেন না।

১০/CMC DETAILS:-সিএমসি এর মেন ৩-৪ টা বিল্ডিং।১. OPD BUILDING (outdoor patients) – আপনাকে ডাক্তার দেখবেন মুলত এই বিল্ডিং এ। এর ৫ টা ফ্লোর এ কাজ হয় সাধারনত।> গ্রাউন্ড ফ্লোর:- এই ফ্লোর টা সমস্ত টেষ্ট এর জন্য বরাদ্দ। blood, x-ray,urine test সহ প্রায় সব টেষ্ট এখানে হয়। ডাক্তার যে টেষ্ট গুলো লিখে দিয়েছে, সেই স্লিপ টা নিয়ে পেমেন্ট ক্যাস কাউন্টার এ যেতে হয়। পেমেন্ট করার জন্য CASH / DEBIT -CREDIT-ATM CARD/ CRISS CARD ব্যাবহার করা হয়।(বিস্তারিত পরে দেওয়া আছে).।পেমেন্ট করার স্লিপ এ লেখা থাকবে আপনাকে কোথায় কোন রুম এ যেতে হবে। ধরুন ব্লাড টেষ্ট এর জন্য – G20, XRAY- G11 এই রকম।

আপনি সকাল সকাল এসে লাইন এ দাঁড়িয়ে টেষ্ট গুলো করিয়ে নিন। সকাল ৬ টা থেকে কাজ শুরু হয়ে যায়। আপনাকে ৫-৫:৩০ টা থেকে লাইন এ দাড়াতে হবে তাড়াতাড়ি এর জন্য।> ফাস্ট ফ্লোর, সেকেন্ড ফ্লোর, থার্ড় ফ্লোর এ বিভিন্ন রুম এ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট এর প্রাইভেট & জেনারেল ডাক্তার রা দেখেন। আপনার এপোয়েন্টমেন্ট লেটার এ লেখা থাকবে আপনাকে কোথায় কোন ফ্লোর এ যেতে হবে।উদাহরন স্বরুপ:->OPD Building SECOND FLOOR 210, report to MRO at 10:30am… র মানে হল আপনাকে সেকেন্ড ফ্লোর এ ২১০ নং রুম এর সামনে গিয়ে MRO COUNTER E এপোয়েন্টমেন্ট কপি টা জমা দিতে হবে সকাল ১০:৩০এর সময়। ১ ঘন্টা আগে পিছু হলেও প্রব্লেম হয়না সাধারনত।> ISSCC BUILDING:- এটাও OPD BUILDING এর মত গুরুত্ব পুর্ন। এখানে যেসব কাজ গুলো হয়, নিউ এপোয়েন্টমেন্ট, রিপিট এপোয়েন্টমেন্ট, ফার্মেসী, ক্রিস কার্ড, CASH PAYMENT, & অবশ্যই ডাক্তার রাও দেখেন উপরের ফ্লোর গুলিতে।১১/ NEW APPOINTMENT:-সাধারনত ৪-১০ অব্দি কাউন্টার এ নিউ আপোয়েন্টমেন্ট, টেষ্ট, অনান্য কিছুর জন্য পেমেন্ট করা হয় নগদ টাকার মাধ্যমে।

১২/REPEAT APPOINTMENT :-11-13 নং কাউন্টার এ কোন ডাক্তার এর পুনরায় এপোয়েন্টমেন্ট করানো হয়। এক্ষেত্রে কাউন্টার এ বল্ললেই হবে ডাক্টার কবে দেখতে চেয়েছে, ওরা এপোয়েন্টমেন্ট দিয়ে দেবে।ফার্মেসী :- সাধারনত ৩ মাসের জন্য ওষুধ দেয় রোগীদের। ফার্মেসী তএ পেমেন্ট করে ওষুধ নেবার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়।

১৩/ CRISS CARD:-এই কার্ড টা বানিয়ে নিলে আপনার হয়রানি অনেকখানি কম হয়ে যাবে। আপানার HOSPITAL NO.( PATIENT ID) দেখিয়ে বললেই ৪০২ নং কাউন্টার থেকে ক্রিস কার্ড বিষয়ক যাবতীয় সাহায্য করে দেবে। এই ক্রিস কার্ডে আপনাকে টাকা ভরতে হবে অগ্রিম ভাবে ( trhough cash transffer /atm transffer). তবে আমি ATM card ইউজ করেই কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। ক্রিস কার্ডের মজা হল বেশি বড় লআইনে দাঁড়াতে হবে না পেমেন্ট এর জন্য কারন criss card payment counter আছে প্রায় সব জাইগায়।১৪/APPOINTMENT DATE CHANGE:-এগিয়ে বা পিছিয়ে আনা….ISSCC building e HELPDESK এ লম্বা লাইন দেবেন পেমেন্ট স্লিপ টা নিয়ে। অনেক ভীড় হয়। ওখানে আপনার প্রব্লেম বঅললেই ওরাই ডেট চেঞ্জ এর ব্যাবস্থা করে দেবে।(আগে যদি ডেট ফাকা থাকে তবেই)

১৫/ PMR BUILDING:-সাধারনত ফিজিওথেরাপি ডিপার্টমেন্ট বলা যেতে পারে। বিভিন্ন ফিজিওথেরাপি এর যন্ত্রপাতি, জুতা, ডুপ্লিকেট ব্রেস্ট( সিলিকন ব্রেস্ট), ইত্যাদি সকল জিনিস এর জন্য এই ডিপার্টমেন্ট এ যেতে হয়। পেমেন্ট স্লিপ অথবা এপোয়েন্টমেন্ট লেটার এ PMR BUILDING উল্লেখ থাকবে।১৬/WARD BUILDING:-পেশেন্ট দের সার্জারি & ট্রিটমেন্ট এর প্রয়োজন এ এখানে পেশেন্ট দের ভর্তি করা হয়। এত পরিস্কার পরিছন্ন & জীবাণুমুক্ত জাইগা হয়ত আপনার বাড়ির রুমগুলিও নয়। DIAGONASIS এর উপর বেশি জোর দেয়। অনেক টেষ্ট দেয়। তারপর যখন রোগ ধরা পড়ে তখনই চিকিৎসা করে। (কোলকাতার চেয়ে এখানেই এগিয়ে)।টেষ্ট গুলি মুলত ৩ জায়গায় করানো হয়। ১৭/OPD BUILDING:-সাধারণত ম্যাক্সিমাম জনের টেষ্ট এখানেই করানো হয়। তবে বিশেষ কিছু টেষ্ট এর জন্য যেমন USG এর জন্য ৩-৪ দিন ও লাগতে পারে। তাই যখন ডাক্টার এর সাথে কথা বলবেন ওনাকে রিকুয়েস্ট করবেন যেন আপনার টেষ্ট গুলি ALPHA CLINIC এ পাঠিয়ে দেয়। ওনাদের একটা কলমের খোচা দিলেই আপনার ৩-৪ দিনের কাজ টি ১ দিনেই হয়ে যাবে। ১৮/ EMERGENCY PATIENT:-এর জন্য এমার্জেন্সী টেষ্ট এর ব্যাবস্থা আছে। (Collected )

NB: করোনার এই মহামারীর মধ্যে দেশের যেকোনো স্থান থেকে ঘরে বসে ভারতীয় ভিসা সার্ভিস, ডক্টর অ্যাপয়েন্ত্মেন্ট, বিমান ও ভারতীয় রেলের টিকিট নিতে পারেন আমাদের কাছ থেকে। আমাদের দক্ষ টিম সার্বক্ষণিক আপনাকে দ্রুত সার্ভিস দিতে প্রস্তুত আছে । প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদেরকে মেইল করে ঘরে বসে আপনি সার্ভিসটি নিতে পারবেন । আমাদের টিম অত্যান্ত দক্ষতা ও যত্নের সাথে কাজ করে থাকে।

✓আমাদের ঠিকানা:

ট্রিট এক্সপার্ট, ডেমরা ,ঢাকা । ✓যে কোন জিজ্ঞাসার জন্য ফোন করতে পারেন সকাল 9 টা থেকে রাত 9 টা পর্যন্ত : 01716124124 এই নম্বরে 09696124124 (24/7)। ✓ আমাদের সম্পর্কে আরো জানতে গুগলে সার্চ করতে পারেন অথবা আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। Google search : Treat Expert Website : www.treatexpert.com Email : treatexpertbd@gmail.com / care@treatexpert.com